হলুদ পোড়া গল্প অবলম্বনে ধীরেনের স্ত্রীর চরিত্রটি লেখো। দ্বাদশ শ্রেণী
![]() |
প্রশ্ন:- "হলুদ পোড়া" গল্প অবলম্বনে ধীরেনের স্ত্রী শান্তির চরিত্রটি আলোচনা করো।
উত্তর : প্রখ্যাত সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'হলুদ পোড়া’ গল্পের নারীচরিত্রগুলির মধ্যে অন্যতম হল 'শান্তি' চরিত্র। গল্পে তার পরিচয় সে
ধীরেনের স্ত্রী। তার চরিত্র পর্যালোচনা করতে গিয়ে যে বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা হলো।
পুরুষতান্ত্রিকতার কাছে অসহায় :-স্থানীয় স্কুল মাস্টার, বিজ্ঞানের ছাত্র অর্থাৎ ধীরেনের গেঁয়ো বউ হিসেবে গল্পে তার আবির্ভাব। বিয়ের বছর
দুয়েকের মধ্যে তার চার ছেলেমেয়ের জন্ম দেওয়া ব্যাপারটা যেন তাকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আরও বেশি করে গ্রাম্যতা দোষে দুষ্ট করে তুলেছে।
পতিব্রতা :- পতিব্রতা ও সাংসারিক বাঙালি যে আদর্শবাদ—শান্তি যেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। এ গল্পে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে আঁকড়ে বেঁচে থাকা এক চেনা বাঙালি বধূর ছবি শাস্তির মধ্যে লক্ষ করা গেছে। শুভ্রাকে নিয়ে গ্রামবাসীদের নানান গুজবের কথা শান্তি যখন ধীরেনকে বলতে গেছে তখন ধীরেন তাকে এসব কথা তার কানে তুলে কঠোরভাবে নিষেধ করলে শান্তি আর সে-কথা বাড়ায়নি। ধীরেন যখন ধীরে ধীরে অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়েছিল তখন শাস্তি সর্বতোভাবে তার পাশে থেকেছে
পারিবারিক অটুট বন্ধন : চারিদিকের ভীতিময় পরিবেশের মধ্যে থেকেও শাস্তি পরিবারকে রক্ষা করার জন্য যা কিছু করণীয় তা করেছে, অশরীরী হাত থেকে কীভাবে বাঁচা যায় তা জানার জন্য সে ক্ষেন্তি পিসির কাছে গেছে এবং তাঁর কথামতো বাঁশ কাটিয়ে এনে তার দু-দিক পুড়িয়ে উঠোনে পেতেছে এ ছাড়াও শান্তির মধ্যে আরও নানান গুণাবলি লক্ষ করা গেছে। প্রেক্ষাপটে সেগুলি অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও সমকালীন সমাজের রীতিতে সেটা ছিল সত্য। শান্তির সাংসারিক গুণাবলি:: সন্ধ্যার আগেই সে রান্নাবান্নার কাজ শেষ করে ছেলেমেয়েদের খাইয়ে দেয়, অন্ধকার ঘনিয়ে এলে ধীরেনকে সঙ্গে না নিয়ে চৌকাঠ পেরোয় না, নিজে খেয়ে ধীরেনের খাবার যত্ন করে ঢেকে রাখে। শান্তির সাংসারিক গুণাবলির নিদর্শন। এইভাবে লেখকের সমকালীন কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজে 'শাস্তি' চরিত্রটি বিশেষভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
