জ্ঞান যেথা মুক্ত । মুক্তজ্ঞান বলতে কবি কি বুঝিয়েছেন ? প্রার্থনা কবিতা || দ্বাদশ শ্রেণী বাংলা।
![]() |
প্রশ্ন: “জ্ঞান যেথা মুক্ত”—মুক্তজ্ঞান বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নৈবেদ্য' কাব্যের ৭২ নং কবিতা ‘প্রার্থনা' থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে কবি মুক্তজ্ঞানের আলোচনা করেছেন। কবির মতে জ্ঞান কেবলমাত্র পাঠ্যপুস্তকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না।
পাঠ্যপুস্তক থেকে অর্জিত জ্ঞান হল গণ্ডিবদ্ধ জ্ঞান। যে জ্ঞান প্রকৃতির পারিপার্শ্ব থেকে অর্জন করা হয়, সেই জ্ঞানের মধ্যে সংকীর্ণতার স্থান থাকে না। ক্ষুদ্রতা, মলিনতার দ্বারা যে জ্ঞানকে আবদ্ধ করা যায় না, সেই জ্ঞানই হল মুক্তজ্ঞান।
প্রশ্ন: “যেথা গৃহের প্রাচীর....” – কোন্ প্রসঙ্গে কবি ‘গৃহের প্রাচীর'-এর অবতারণা করেছেন?
উত্তর : প্রাচীন ভারতের জ্ঞানচর্চার প্রসার, তৎকালীন ভারতীয়দের সাহসিকতা এবং মুক্তচিন্তার বিচ্ছুরণ কবিকে মুগ্ধ করেছে অথচ বর্তমান ভারতবর্ষে তা অনুপস্থিত বলে উপলব্ধি করছেন কবি। কবির ধারণা বর্তমান ভারতীয়রা গৃহের ক্ষুদ্র পরিসরেই নিজেদের আবদ্ধ করে রেখেছে। জ্ঞানচর্চা এখানে অবরুদ্ধ, নানাপ্রকার সংকীর্ণ আচার-বিচারের বেড়াজালেই মগ্ন হয়ে পড়েছেন বর্তমান ভারতবাসী, যা প্রকৃত জ্ঞানচর্চার পরিপন্থী। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘প্রার্থনা' কবিতায় 'গৃহের প্রাচীর'-এর অবতারণা করেছেন।
প্রশ্ন: "পৌরুষেরে করেনি শতধা...”—উক্তিটির অর্থ বিবৃত করো।
উত্তর : কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'প্রার্থনা' কবিতায় প্রশ্নোদ্ধৃত উদ্ধৃতিটি প্রয়োগ করেছেন। আলোচ্যমান কবিতায় কবি প্রাচীন ভারতের প্রশংসা করেছেন কুণ্ঠাহীনভাবে। কবির মতে প্রাচীন ভারতের চিত্ত ছিল ভয়শূন্য; উচ্চশিরে সাহসিকতাকে আশ্রয় করে তারা বিপদের বিরোধিতা করত। তাদের বীর্যবত্তা তথা পৌরুষ ছিল অটল, কোনো ভয় বা প্রলোভনেই পৌরুষকে তারা বিকিয়ে দিত না। তাদের নানাবিধ কর্মধারায় এই পৌরুষের প্রতিফলন ঘটতে দেখা
যেত। ভীরুতার সাধনায় তারা মগ্ন থাকত না। লৌহসম কঠিন, বীরোদাত্ত তাদের পৌরুষ ছিল অভঙ্গুর।
