তার গুনপনা দেখার লোভে আরো অনেক এসে ভিড় বাড়িয়ে দিল। উক্ত ব্যক্তির গুণপনা সম্পর্কে আলোচনা করো। হলুদ পোড়া গল্প|| দ্বাদশ শ্রেণী
![]() |
প্রশ্ন:- “তার গুণপনা দেখবার লোভে আরও অনেক এসে ভিড বাড়িয়ে দিল। উক্ত ব্যক্তির গুণপনা সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর : উদ্ধৃত অংশটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'হলুদ পোড়া' নামক গল্প থেকে গৃহীত। এখানে নামকরা গুশিন কুঞ্জর গুণপনার কথা বলা হয়েছে।বলাই চক্রবর্তীর মৃত্যুর একুশ দিনের মাথায় তার ভাইপো নবীনের স্ত্রী দামিনীর ওপর অশরীরী আত্মা ভর করে। এ কথা লোকমুখে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে গাঁয়ের ধীরেন ডাক্তারকে ডাকলেও সে পাস করা নয় বলে চিকিৎসা করতে রাজি হয়নি। তবে সে কৈলাশ ডাক্তারকে ডাকতে বললেও নবীন তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের কথায় কুঞ্জ গুণিন ও কৈলাশ ডাক্তার উভয়কেই ডাকতে পাঠায়। কুঞ্জ অবশ্য লোকমুখে খবর পেয়ে আগেই সেখানে এসে
হাজির হয়। সেখানে এসেই সে তার সম্মোহিনী বিদ্যা প্রয়োগ করতে শুরু করে। তার কথায় ভির সাঁঝে ভর করেছেন, সহজে ছাড়বেন লা।”—যা
মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে। তবে পরবর্তীতে সে-ই আবার অভয় দিয়ে বলে, “তবে ছাড়তে হবেই শেষ তক। কুঞ্জ মাঝির সাথে তো চালাকি চলবে না।” সে প্রথমে সকলকে দাওয়া থেকে উঠোনে নামিয়ে দেয় এবং সেখানে জল ছিটিয়ে দেয় মন্ত্র পড়তে পড়তে। এরপর দামিনীর এলোচুল শক্ত করে দাওয়ার খুঁটিতে বেঁধে দেয়। দামিনীর আর নড়াচড়ার ক্ষমতা থাকল না। মাঝে মাঝে নড়তে গেলে চুলে টান পড়ে এবং সে আর্তনাদ করে ওঠে। কৃষ্ণ নানান টিটকিরি দিতে শুরু করে। মন্ত্রমুগ্ধের মতো সবাই তা দেখে। কুঞ্জ নানান অঙ্গভঙ্গি করতে করতে সামনে পিছনে এগিয়ে আসে এবং কেমন সব দুর্বোধ্য মন্ত্র আওড়ায়। মালসাতে আগুন করে তাতে দু-একটা শুকনো পাতা আর শিকড় পুড়তে দেয়। চামড়া পোড়ার মতো একটা উৎকট গন্ধে চারিদিক ভরে যায়। দামিনীর আর্তনাদ ছটফটানি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। একটা সময় সে খুঁটিতে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে ওঠে এবং বোজা বোজা চোখে কুঞ্ঝর দিকে তাকিয়ে থাকে। কুণ্ডু তখন কাঁচা হলুদ পুড়িয়ে তার নাকে শোকায়। দামিনীর
সর্বাঙ্গে শিহরন জাগে। তখন কুণ্ডু তাকে প্রশ্ন করে—“কে তুই?”
দামিনী উত্তর দেয়—“আমি শুভ্রা গো, শুভ্রা।যে খুন হয়েছে .. আমায় মেরো না।” তখন বুড়ো ঘোষালের নির্দেশে কুঞ্জ তাকে কে খুনি জিজ্ঞেস করার আগেই দামিনী ফিস ফিস করে জানিয়ে দেয়—বলাই খুড়ো তাকে খুন করেছে।
হাজির হয়। সেখানে এসেই সে তার সম্মোহিনী বিদ্যা প্রয়োগ করতে শুরু করে। তার কথায় ভির সাঁঝে ভর করেছেন, সহজে ছাড়বেন লা।”—যা
মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে। তবে পরবর্তীতে সে-ই আবার অভয় দিয়ে বলে, “তবে ছাড়তে হবেই শেষ তক। কুঞ্জ মাঝির সাথে তো চালাকি চলবে না।” সে প্রথমে সকলকে দাওয়া থেকে উঠোনে নামিয়ে দেয় এবং সেখানে জল ছিটিয়ে দেয় মন্ত্র পড়তে পড়তে। এরপর দামিনীর এলোচুল শক্ত করে দাওয়ার খুঁটিতে বেঁধে দেয়। দামিনীর আর নড়াচড়ার ক্ষমতা থাকল না। মাঝে মাঝে নড়তে গেলে চুলে টান পড়ে এবং সে আর্তনাদ করে ওঠে। কৃষ্ণ নানান টিটকিরি দিতে শুরু করে। মন্ত্রমুগ্ধের মতো সবাই তা দেখে। কুঞ্জ নানান অঙ্গভঙ্গি করতে করতে সামনে পিছনে এগিয়ে আসে এবং কেমন সব দুর্বোধ্য মন্ত্র আওড়ায়। মালসাতে আগুন করে তাতে দু-একটা শুকনো পাতা আর শিকড় পুড়তে দেয়। চামড়া পোড়ার মতো একটা উৎকট গন্ধে চারিদিক ভরে যায়। দামিনীর আর্তনাদ ছটফটানি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। একটা সময় সে খুঁটিতে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে ওঠে এবং বোজা বোজা চোখে কুঞ্ঝর দিকে তাকিয়ে থাকে। কুণ্ডু তখন কাঁচা হলুদ পুড়িয়ে তার নাকে শোকায়। দামিনীর
সর্বাঙ্গে শিহরন জাগে। তখন কুণ্ডু তাকে প্রশ্ন করে—“কে তুই?”
দামিনী উত্তর দেয়—“আমি শুভ্রা গো, শুভ্রা।যে খুন হয়েছে .. আমায় মেরো না।” তখন বুড়ো ঘোষালের নির্দেশে কুঞ্জ তাকে কে খুনি জিজ্ঞেস করার আগেই দামিনী ফিস ফিস করে জানিয়ে দেয়—বলাই খুড়ো তাকে খুন করেছে।
