"হঠাৎ কোনির দুচোখ জলে ভরে গেল।"- কোনির দুচোখ জলে ভরে ওঠার কারণ কি? এরপর কি ঘটেছিল? কোনি গল্প || দশম শ্রেণী
প্রশ্ন;-'হঠাৎ কোনির দু-চোখ জলে ভরে এল – কোনির দু-চোখ জলে ভরে ওঠার কারণ কী? এরপরে কী ঘটেছিল?
উত্তর- মতি নন্দীর 'কোনি' উপন্যাসের পঞ্চম পরিচ্ছেদে আমরা আলোচ্য উদ্ধৃতির উল্লেখ পাই। কোনি শ্যামপুকুর বস্তির অতি দরিদ্র পরিবারের একটি মেয়ে। তার দু-চোখ জলে ভরে ওঠার কারণ হল-
রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠিত এক মাইল সাঁতার প্রতিযোগিতায় একদিকে যেমন বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের অভিজাতবংশীয়া হিয়া মিত্র অংশগ্রহণ করেছিল, অন্যদিকে তেমনি ছিল শ্যামপুকুর বস্তির মেয়ে কোনি। প্রতিযোগিতায় সাধারণ সাঁতারু কোনি নিজেকে উজাড় করেও উন্নত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হিয়া মিত্রের সঙ্গে পেরে উঠতে পারিনি। তার কাছে পরাজিত হয়। চরম ব্যর্থতা থেকেই কোনির দু-চোখ জলে ভরে ওঠে। কোনি পরাজিত হওয়ায় সে তার বেদনার বহিঃপ্রকাশ ঘটায় চোখের জলের মাধ্যমে।
এরপর কোনি তার দাদা কমলকে কথা দিয়েছিল যে, পরের প্রতিযোগিতায় মেয়েদের মধ্যে সে প্রথম হবেই। সেজন্য ধার করেও কমল কোনিকে একটি কস্টাম কিনে দিয়েছিল।
ক্ষিতীশের কোনিকে বলা 'সাঁতার শিখবে?' কথাটির মধ্যে ছিল এক স্নেহভরা ভালোবাসা। কথাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই কোনির মনের
একটি অংশে তাদের দরিদ্রাবস্থা এসে ধাক্কা দেয়। সে জানে সাঁতার শেখার তার আশা থাকলেও সাধ্য নেই। তাই ক্ষিতীশের স্নেহভরা কণ্ঠ ও সাঁতার শেখানোর প্রস্তাব তাকে দুর্বল করে দেয়; আর অন্তরের সমস্ত ক্ষোভ, দুঃখ, অভিমান অশ্রু হয়ে দেখা দেয়।
॥ কোনির জীবনের সবচেয়ে দিশা পরিবর্তনকারী ঘটনা এরপরেই ঘটেছিল। সাদাসিধে পরিবারের কোনি যথেষ্ট ভালো সাঁতার জানলেও, সে কোনোদিন কোনো প্রশিক্ষকের কাছে সাঁতার শেখার কথা ভাবেনি। কিন্তু তার জীবনের এই পর্যায়ে এসে সে ক্ষিতীশের মতো একজন নিবেদিতপ্রাণ প্রশিক্ষকের কাছে শেখার সুযোগ পায়, যে সুযোগ তাকে শেষপর্যন্ত পৌঁছে দেয় সাফল্যের শীর্ষে।