দরবার ত্যাগ আমরা বাধ্য হচ্ছি জাঁহাপনা । বক্তা কে ? তারা কেন দরবার ত্যাগ করতে চান ? সিরাজদৌলা নাটক || দশম শ্রেণী
![]() |
প্রশ্ন; "দরবার ত্যাগ করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি জাঁহাপনা।'— বক্তা কে? তাঁরা কেন দরবার ত্যাগ করতে চান ?
উত্তর:- শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশ থেকে গৃহীত। আলোচ্য অংশের বক্তা হলেন নবাবের সিপাহসালার মীরজাফর।
||
নবাব সিরাজের রাজত্বের গৃহবিবাদের এক স্পষ্ট মুহূর্তের ছবি ধরা পাড়েছে মীরজাফরের বক্তব্যে। নবাবের সভাসদ জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ, মীরজাফর প্রমুখ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে মিলিত হয়ে গোপন ষড়যন্ত্রে সিরাজকে বাংলার মসনদ থেকে উৎখাত করতে চাইছিলেন। সেই কারণেই সিরাজকে সমর্থন ও সহযোগিতা যাঁরা সর্বদা করছিলেন; সেই মোহনলাল, মীরমদন, গোলাম হোসেনদের ক্ষমতা ও পদের মানমর্যাদাকে কটাক্ষ করতে পিছপা হন না মীরজাফর। নবাবের বিচক্ষণতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। নবাবকে প্রকাশ্য অপমানে নবাবের বিশ্বস্ত অনুচর মীরমদন ও মোহনলাল নিম্নপদের কর্মচারী হারেও প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। অনিবার্যভাবেই দুই বিরোধী পক্ষের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে মীরজাফর নিজের অভিলাষ পূর্ণ করতে নবাবের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন এই বলে যে, তাদের মতো ক্ষমতাশালীদের পরিবর্তে নবাব যদি মীরমদন কিংবা মোহনলালের মতো সাধারণ অনুচরদের ওপর অধিক আস্থা ও বিশ্বাস রাখেন, তবে তাঁরা রাজসভা ত্যাগ করবেন। বস্তুতপক্ষে মীরজাফরের এমন কটাক্ষ ও নবাব আনুগত্য কেবল এক ছলনা মাত্র, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে যোগ দেওয়ার অজুহাতের রাস্তা।
নবাবের সঙ্গ ত্যাগ করার গোপন ষড়যন্ত্র হেতুই মীরজাফর তার অনুগামীদের নিয়ে দরবার ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন।